শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন
শাহাদুল ইসলাম সাজু, জয়পুরহাট প্রতিনিধি : পূর্ব শ্বত্রুতার জের ধরে জয়পুরহাট সদরের কাদিপুর গ্রামের আব্দুল আলিম ও আক্কেলপুর উপজেলার লক্ষীভাটা গ্রামের জোলেখা বেগম হত্যা মামলার পৃথক রায়ে ৭ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদানসহ প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছে জয়পুরহাটের একটি আদালত।
জয়পুরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক মো: আব্বাস উদ্দীন বৃহস্পতিবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে পৃথক ভাবে এ রায় ঘোষনা করেন।
জয়পুরহাট জেলা ও জজ আদালতের পিপি এ্যাড: নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, জয়পুরহাট সদরের কাদিপুর গ্রামের আব্দুল আলিম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম সাজা প্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছেন স্থানিয় কড়ই কাদিপুর গ্রামের আমিনুর ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস , আব্দুল হান্নান, আনোয়ার হোসেন, মো: দুদু ও ঘুটু আলম ।
অপরদিকে আক্কেলপুর উপজেলার লক্ষীভাটা গ্রামের স্ত্রী জোলেখা বেগম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম সাজা প্রাপ্ত আসামি হচ্ছে স্বামী ইয়াছিন আলী । মামলার বিবরণে জানা যায়, জয়পুরহাট সদরের কাদিপুর গ্রামের জনৈক আব্দুল মান্নান মৌলভির পুকুর পাহারা দেওয়ার কাজ করতো ওই গ্রামের আব্দুল আলিম। ২০০৯ সালের ৭ মার্চ রাতে পূর্বের ন্যায় পুকুর পাহারা দিতে যায়।
পরের দিন সকালে স্ত্রী মোসলেমা বেগম জানতে পারেন পুকুরের পাশে একটি ধান ক্ষেতে আব্দুল আলিমের রশি দিয়ে হাত-পা অবস্থায় মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। এ ব্যপারে অজ্ঞাত আসামী করে ৮ মার্চ জয়পুরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন স্ত্রী মোসলেমা বেগম। পুলিশ তদন্ত শেষে সাজাপ্রাপ্ত ৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০০৯ সালের ২২ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত দীর্ঘ শুনানী অন্তে আজ বৃহষ্পতিবার আব্দুল আলিম হত্যা মামলায় ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডসহ প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করেন।
অপরদিকে, আক্কেলপুর উপজেলার লক্ষীভাটা গ্রামের স্বামী ইয়াছিন আলী স্ত্রী জোলেখা বেগমকে নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালের ১৮ এপ্রিল বেদম মারপিট করে। এতে জোলেখা বেগম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে প্রথমে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং এখানে অবস্থার অবনতি হলে নওগাঁ জেলা হাসপাতালে নেওয়ার সময় রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় জোলেখা বেগমের পিতা আব্দুল জোব্বার বাদী হয়ে জামাই ইয়াছিন আলীকে আসামী করে আক্কেলপুর থানায় একটি হত্যা মামলায় দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০০১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালত দীর্ঘ শুনানী শেষে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় বৃহষ্পতিবার স্বামী ইয়াছিন আলীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করে আদেশ প্রদান করেন। সরকার পক্ষে উভয় মামলা পরিচালনা করেন এ্যাড: নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল পিপি ও এ্যাড: উদয় সিংহ এপিপি এবং আসামী পক্ষে ছিলেন এ্যাড: এ ই এম খলিলুর রহমান, এ্যাড: মোস্তাফিজুর রহমান, এ্যাড: নন্দকিশোর আগরওয়ালা, এ্যাড: রফিকুল ইসলাম তালুকদার, এ্যাড: এস এ আলীম, এ্যাড: সৈয়দ ফিরোজ খান নুন